ফ্রিজ কেনার আগে এটি অবশ্যই পড়ুন
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সংসারে বিভিন্ন ধরনের জিনিস প্রয়োজন হয়। তার মধ্যে অন্যতম একটি জিনিস হল ফ্রিজ। আজকাল এটি ছাড়া যেন চলেই না। এটি বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকাভুক্ত। আর এই ফ্রিজ কিনতে গিয়ে না বুঝেই অনেকে ঠকে চলেছে। তাই আজকে আমি আমার এই পোস্টে ফ্রিজ নিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল লিখতে চলেছি। আশা করি মনোযোগ দিয়ে এই পোস্টটি পড়লে আপনারা খুবই উপকৃত হবেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক–
ফ্রিজ কেনার সময় কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে?
প্রথমে আপনাকে যে বিষয়গুলোকে রাখতে হবে তাহলে আপনার বাজেট কত? এবং এই বাজেট অনুযায়ী বিভিন্ন কোম্পানির ফ্রিজের স্পেসিফিকেশন দেখতে হবে।
যেমন:
সাইজ ও স্পেস: আপনি কতটুকু স্পেসে ফ্রিজ রাখতে পারবেন সেটা বিবেচনা করুন। আপনার বাসা বা অফিসের জন্য প্রয়োজনীয় সাইজের ফ্রিজ সিলেক্ট করুন এবং আপনার ফ্যামিলি মেম্বার অনুযায়ী সাইজ এবং ক্যাপাসিটি নির্ণয় করুন। যেমন ধরুন আপনার ফ্যামিলিতে পাঁচজন লোক আছে তাহলে আপনার জন্য ২২০ থেকে ২৮০ লেটার পরিমাণের ফ্রিজই যথেষ্ট। আর যদি ৭ থেকে ১০ জন হয় তাহলে একটু বড় মাপের ফ্রিজ নিবেন।
ব্র্যান্ড ও গুণমান: বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফ্রিজ উপলব্ধ থাকতে পারে। গ্রাহক প্রকারের জন্য বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে। জনপ্রিয় এবং ভালো রিভিউসহ কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ফ্রিজ বিবেচনা করুন।
ফ্রস্ট ও নন ফ্রস্ট ফ্রিজ কাকে বলে?
বাজেট: ফ্রিজের জন্য আপনার বাজেট নির্ধারণ করুন। আপনি যদি একটি প্রয়োজনীয় সুবিধামূলক ফ্রিজ খুঁজছেন তবে একটি মধ্যম বাজেটের ব্র্যান্ড বাছাই করা যায়।
গ্যারান্টি ও সাপোর্ট: ফ্রিজ কেনার সময় নিশ্চিত করুন যে পণ্যটির জন্য গ্যারান্টি এবং সাপোর্ট সুবিধা উপলব্ধ আছে কিনা। এটি সমস্ত মেয়াদী সময়ে আপনার ফ্রিজের সাথে স্বাভাবিক কাজ করার জন্য উপযুক্ত সাপোর্ট ও সেবা প্রদান করবে। এবং কোন কোন পার্টস কত বছর ওয়ারেন্টি তা ভালোভাবে বুঝে নিবেন। এবং আপনি যে কোম্পানির ফ্রিজ নিবেন সেই কোম্পানির আফটার আপনার সেল সার্ভিস কেমন। এটা শুধু ফ্রিজের ক্ষেত্র নয় বরং যে কোন পণ্যের ক্ষেত্রেই।
ইনার লেআউট: অর্থাৎ আপনার ফ্রিজের ভেতরকার অংশে কি কি ব্যবহার করা হয়েছে ভেতরের প্লাস্টিক কোয়ালিটি, কম্প্রেসার এ কি গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে, কনডেন্সরে কি ব্যবহার করা হয়েছে, কম্প্রেসার এ কি গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে এবং লাইটিং কোয়ালিটি কেমন ইত্যাদি বিষয়ে যাচাই করে নেবেন।
কম্প্রেসর টাইপ: ফ্রিজের কম্প্রেসর টাইপ ব্যক্তিগত সঙ্গতি এবং বিদ্যুৎ বিল সম্পর্কে বিবেচনা করার প্রয়োজন। ইনভার্টার কম্প্রেসর ব্যবহার করা ফ্রিজ শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করতে পারে। অপরদিকে নন ইনভাটার ফ্রিজগুলিতে তুলনামূলকভাবে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে যদি আপনার বাজেটে কোন সমস্যা না হয় তাহলে অবশ্যই আপনি ইনভার্টার ফ্রিজ চয়েস করবেন।
ইনভার্টার ও নন ইনভাটার কাকে বলে?
1. **ইনভার্টার ফ্রিজ (Inverter Fridge):** ইনভার্টার ফ্রিজ এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে ফ্রিজের মধ্যে একটি ইনভার্টার সার্কিট ব্যবহার করা হয়। এই ইনভার্টার সার্কিট ফ্রিজের কম্প্রেসর মোটরটিকে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, যা শীতলন এবং শীতলকে ভালোভাবে উপরে আনতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে ফ্রিজের কম্প্রেসর মোটর চালানো হলে এটি আস্তে ও ধীর গতিতে চলে। যার ফলে বিদ্যুৎ খরচ খুবই কম হয়।
2. **নন-ইনভার্টার ফ্রিজ (Non-Inverter Fridge):** এই প্রকারের ফ্রিজগুলি সাধারণ ফ্রিজের বিদ্যুত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ সিস্টেম ব্যবহার করে না, অর্থাৎ এটি ইনভার্টার সার্কিট বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে না। ফ্রিজের কম্প্রেসর মোটর সাধারণভাবে আন-বন শীতলনে এবং শীতল তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে একই তরম্পো দিয়ে চলে। যাওয়ার ফল, তুলনামূলক ভাবে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হয়।
সুতরাং ইনভার্টার প্রযুক্তি অবশ্যই একটি উন্নত প্রযুক্তি। আপনারা অবশ্যই ইনভাটার ফ্রিজ নেওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন। তাছাড়া ইনভার্টার ফ্রিজের আরো অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
শক্তি ব্যবহার এবং বিদ্যুত্প্রবাহ: ফ্রিজের বিদ্যুত খরচ এবং এনার্জি রেটিং বিচার করুন। ফ্রিজের গায়ে সামনে দেখবেন ফাইভ স্টার একটি স্টিকার লাগানো থাকে এটি হচ্ছে পাওয়ার ইফিসিয়েন্সি স্টিকার। অর্থাৎ উক্ত ফ্রিজটি কি পরিমান বিদ্যুত খরচ কমাতে পারে। যত বেশি স্টার থাকবে তত বেশি পাওয়ার ইফিসিয়েন্সি হবে।
আশা করি এই কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রেখে আপনার বাজেটের মধ্যে আপনি যদি ফ্রিজ ক্রয় করেন আপনি কখনোই ঠকবেন না।