কি দেখে ফোন কিনবেন?
কি দেখে ফোন কিনবেন?
সাধারণত আমাদের ফোন কেনার প্রয়োজন হলে সপে গিয়ে দেখি যে ফোনটা আমাদের কাছে ভালো লাগে অথবা দোকানদার যেটিকে ভালো বলে। আর ক্যামেরাটা একটু ভালো লাগে সেটাই কিন্তু কিনে নিয়ে চলে আসি।
কিন্তু এটা কখনোই করা উচিত নয়।
কারণ বাসায় আনার পরে কিছুদিন ইউজ করার পর আমরা দেখি যে ফোনে হিটিং ইস্যু আছে,ফোনের ব্যাটারি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি ড্রেন হচ্ছে সেই সাথে আরো নানা রকমের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি।
ফোন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কিছু গাইডলাইন ফলো করতে হবে।
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদেরকে জানাবো ফোন কেনার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।
একটা ফোন কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন এর পারফরমেন্সের উপর।
পারফরমেন্স মানে হচ্ছে.. ফোনের Processor, Ram,Rom তারপর হচ্ছে Operating System.
মোবাইলের প্রসেসর কেমন হওয়া উচিত?
এখন যদি প্রসেসরের কথা বলি অবশ্যই রিকমান্ড করব স্ন্যাপড্রাগনের প্রসেসর কিনতে।
কারণ স্ন্যাপড্রাগনের প্রসেসর খুব বেশি লাস্টিং করে থাকে। সেই সাথে হিটিং ইস্যুও তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায়।
আর যদি মিডিয়াটেকের প্রসেসরের কথা বলি তাহলে এটাও এখন মোটামুটি ভালই সার্ভিস দিয়ে থাকে।
আর সবচেয়ে ভালো প্রসেসর হচ্ছে বায়োনিক। যেটা আই ফোনে ব্যবহার করা হয়।
যদি আপনার ক্যাপাসিটি থাকে তাহলে অবশ্যই আইফোন কিনতে পারেন।
প্রসেসর সম্পর্কে আরো অনেক ব্যাখ্যা আছে যা দিতে গেলে অনেক সময় লাগবে।
মোবাইলের রেম এবং রম কেমন নেওয়া উচিত?
তারপর হলো Ram এবং Rom..
Ram এর ক্ষেত্রে আপনারা সর্বনিম্ন 4 জিবি এবং Rom 64 জিবি নিবেন। এর চেয়ে কম স্টোরেজ নেওয়া কোনোভাবেই ঠিক হবে না।
কারণ যদি 32 জিবি নেন তাহলে 20 জিবি Operating system এ চলে যাবে।
এবং ৬ মাস বা এক বছর পর ফোনে কিছু না থাকলেও স্টোরেজ ফুল দেখাবে।
যার কারনে আপনার ফোনটি স্লো হয়ে যাবে এবং হ্যাং করবে।
আর Ram DDR4X এবং Rom UFS 2.1 এর নিচে নেওয়া ঠিক হবে না।
কারণ এটা হচ্ছে বর্তমান আপডেট। এর নিচে নিলে ফোনের স্পিড ভালো হবে না।
মোবাইলের অপারেটিং সিস্টেম কেমন থাকলে ভালো হবে?
তারপর হচ্ছে Operating system..
এক এক ব্যান্ডে এক এক ধরনের Operating system ব্যবহার করা হয়।
ভালো মানের কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেম-
1. One UI. (Samsung)
2. Oxyzen OS (One plus)
3. Miui (Xiaomi)
এই তিনটি অপারেটিং সিস্টেম খুবই ভালো।
তারপর Realme এবং Oppo এর পারফরমেন্সও বেশ ভাল।
উল্লেখিত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে ফোন কেনার চেষ্টা করবেন।
এরপর হচ্ছে আপনি কি কারনে ফোন কিনবেন বা আপনি ফোন দিয়ে কি কি কাজ করতে চান।
যেমন আপনি যদি চান ফোন দিয়ে ভালো ফটোগ্রাফি করতে। তাহলে অবশ্যই ভালো ক্যামেরা ওয়ালা ফোন কিনতে হবে।
তবে ক্যামেরার সংখ্যা এবং মেগাপিক্সেল দেখে কখনোই ফোন ক্রয় করবেন না। কারণ ছবির ভালো মানের আউটপুট পেতে চাইলে ভালো মানের সেন্সর দরকার। সেন্সর ভালো হলে ছবির কোয়ালিটি এবং আউটপুট অবশ্যই ভালো হবে।
এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনারা Sony এর সেন্সর দেখে কিনবেন। যদি Sony এর সেন্সরের দাম বেশি থাকে তাহলে Samsung এর সেন্সর কিনতে পারেন।
আর আর ক্যামেরার ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় হচ্ছে Aperture Value.
Aperture Value যত কম হবে ইমেজ তত বেশি শারপ হবে, ডিটেলস বেশি থাকবে, এবং লো লাইটেও ভালো মানের আউটপুট আসবে।
এখন প্রশ্ন করতে পারেন Sony এবং Samsung এর সেন্সর হলেই কি অ্যাপাচার ভ্যালু কম থাকব?
অবশ্যই না। এক্ষেত্রে অপটিমাইজেশনের কিছু ব্যাপার থাকে।
এজন্য আপনারা ফোনের রিভিউ দেখে নিতে পারেন।
তারপর হচ্ছে ইমেজ স্টেবিলাইজেশন। অর্থাৎ ভিডিও করার সময় ইমেজ কতটা স্টেবল থাকবে। সেই বিষয়টা আপনারা অবশ্যই দেখে নিবেন।
তারপর বলতে পারেন 4k কি নিতে হবে?
আসলে আমরা যে সমস্ত কাজ করে থাকি তাতে 4k এর তেমন একটা প্রয়োজন পড়ে না। কারণ 4k এর এক মিনিটের একটি ভিডিও রেকর্ড করতে ১ জিবির বেশি চলে যায়
মোবাইলের ব্যাটারি এবং চার্জার কেমন নেওয়া উচিত?
ব্যাটারি এন্ড চার্জার এখন অনেকেই প্রশ্ন করবেন যে কত মিলিয়ন এর ব্যাটারি নেওয়া উচিত। এই সময়ের প্রেক্ষাপটে আমি বলব যে মিনিমাম 5000 Mah এর নিচে নিতে যাবেন না।
আর চার্জারের ক্ষেত্রে হচ্ছে মিনিমাম 18w এর ফাস্ট চার্জার। কারণ এটা এখন সময়ের প্রেক্ষাপটে 18w ফাস্ট চার্জার হলে ওকে। তার যদি কম হয় তাহলে অনেক সময় লাগবে চার্জ দিতে।
মোবাইলের ডিসপ্লে কেমন নেওয়া উচিত
দুটো পপুলার হচ্ছে Ips এবং হচ্ছে Super Amulet. এখন প্রশ্ন করবেন যে কোনটা নিব।
আমি এক বাক্যে বলবো Super amulet নিবেন। কারন Super amulet অনেক বেশি কালারফুল Ips এর তুলনায়। Super amulet দাম একটু বেশি হতে পারে যদি আপনারা পারেন Super amulet নিবেন।
তারপর হচ্ছে Display Resulation...
তারপর আপনারা দেখবেন Display Resulation এ কি রয়েছে Hd নাকি Full Hd নাকি Full Hd+
এক্ষেত্রে আপনারা অবশ্যই Full Hd অথবা Full Hd+ নেওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ শুধু Hd তে Sharpness এর ঘাটতি দেখা যায়।
এগুলো তো গেল মোবাইলের কনফিগারেশন সম্পর্কিত আলোচনা।
তাছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনারা কখনোই পুরাতন মডেলের ফোন কিনতে যাবেন না।
পুরাতন মডেল বলতে..
ধরেন বর্তমানে 2023 সাল চলতেছে আপনারা চেষ্টা করবেন 2023 সালে যে সকল সেট রিলিজ হয়েছে সেগুলো নিতে। কারণ সময়ের প্রেক্ষাপটে মোবাইলের কনফিগারেশন চেঞ্জ না করলে আপনি মোবাইল ফোন চালিয়ে মজা পাবেন না।
তারপর হচ্ছে মোবাইলের গঠন...
আপনার অবশ্যই ফোনের ডিজাইন দেখবেন।তারপর হচ্ছে বিল্ড কোয়ালিটি। অর্থাৎ ফোনটি শক্ত পুক্ত আছে কিনা, কর্নিং গরিলা গ্লাস আছে কিনা ইত্যাদি। কর্নিং গরিলা গ্লাসের যত ভালো কোয়ালিটি পান যেমন কর্নিং গরিলা গ্লাস 3 থেকে 5.
তাছাড়া আরও কিছু বিষয় লক্ষ্য করতে পারেন যেমন মোবাইলে টাইপ সি পোর্ট আছে কিনা ব্লুটুথ এর লেটেস্ট ভার্সন আছে কিনা, 3.5mm হেডফোন জ্যাক রয়েছে কিনা এবং এবং সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো কিনা ইত্যাদি।
সবশেষে বলছি আপনারা ফোনের রিভিউ দেখে তারপরে ফোন কিনবেন। মার্কেটে গিয়ে হুটহাট করে ফোন কিনবেন না।
আজ এই পর্যন্তই আশা করি সকলে ভালো থাকবেন। আর ব্লগটি পড়ে যদি একটুও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে কমেন্টে জানিয়ে যাবেন। এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।
কষ্ট করে ব্লগটি পড়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ ❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️
Thanks all